যখন এক অদ্ভুত সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে ঠিক সেই সময় হাতে এসে পড়ে, স্ফুলিঙ্গ। লেখক আমার পূর্ব পরিচিত। পেশায় কসমেটিক সার্জেন। তাই ছুরি-কাচিঁর মতো উনার কলম আর চিন্তাধারার নিখুঁত পরিবেশন। লেখকের  অন্বেষণ, নিঃশব্দে, দেখা, চক্র, ক্যানভাসে, তোমাকে, পারসিউট। একের মধ্য অনন্য । ভিন্ন মাত্রার, ভিন্ন স্বাদের। একসময় বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত, সিনেমা, সংবাদপত্রের কদর ছিলো আকাশছোঁয়া। কিন্তু, আজ কোথায় সেই স্বর্ণযুগ? আজকে বাজার নামের বিষফোঁড়া অনেক নামী, অনামি লেখকরা স্ফুলিঙ্গের মতো বিষয় নিয়ে লেখার সাহস দেখান না। কিন্তু, কেন? আসলে সবটাই গোপাল ভাঁড়ের গল্পের গা চাটাচাটির মতো ব্যাপার। এঁরা প্রায় প্রত্যেকে মিডিয়ার প্রসাদভোগী। তাই আজকাল বইমেলাতে বই এর বদলে খাবার স্টলে ভীড় বেশী চোখে পড়ে। মিডিয়ার নিউজ পেগের মতো মরা কান্নার রুদালি লেখকদের ভিড় থেকে অনিরুদ্ধ বসুর সাম্প্রতিক উপন্যাস স্ফুলিঙ্গ অনেক আলাদা। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করার সুবাদে, ধান্দাবাজ শোভন রায়চৌধুরী, অঞ্জন বন্দোপাধ্যায়, প্রদীপ গোয়েঙ্কা, অবন্তী, গজেন্দ্র ধনি, পদ্মপর্ণা, মনিকান্ত মোহতা, ধূর্জটি রায় এবং মিডিয়া টাইকুন দিগ্বিজয় ভট্টাচার্যদের আমি হাড়েহাড়ে চিনি। এটা গল্প নয়, রিয়েলিটি। হ্যাঁ, এটাই আজকের মিডিয়ার  কদর্য, পাঁকে কাদায় পরিপূর্ণ  মিডিয়ার আসলি ছবি। ফিল্ম, সাহিত্য, খবরের কাগজ, বৈদ্যুতিন মাধ্যম সবেতেই অস্বাস্থ্যকর ঘিনঘিনে অবক্ষয়ের অন্ধকারে প্রস্তুত গোল গোল লাড্ডু পাঠক-দর্শকদের গেলানো হচ্ছে। স্ফুলিঙ্গ অপটু, অশিক্ষিত, রুগ্ন শিল্পের কারখানায় পরিণত হতে চলা মিডিয়ার দালালদের চেনানো ছাড়াও দেওয়ালির মতো প্রটাগনিস্টকে দিয়ে এর একটা সমাধান সুত্র দিয়েছেন লেখক। যা অনেকটাই পাঁকে পদ্মের মতো। বাস্তবে এমনটা হলে ভালোই হতো। আজকাল যারা বাঁজা জমিতে সংস্কৃতির চাষ করছেন, তাদের বলি একটু নতুন কিছু ভাবুন? আসলে এই অন্ধকার থেকে বাঁচতে স্ফুলিঙ্গ যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন দাবানলের।।

http://www.smritipublishers.com/bookdetail/Sfulinga/39/